Monday, March 22, 2010

নিজে নিজেই পিসি সংযোজন



কমপিউটারের যন্ত্রাংশগুলোকে সঠিকভাবে লাগিয়ে তাকে পুরো কমপিউটারে রূপ দেয়াকেই বলা হয় হার্ডওয়্যার অ্যাসেম্বলিং বা হার্ডওয়্যার সংযোজন। অনেকেই মনে করেন হার্ডওয়্যার সংযোজন খুব কঠিন কাজ। আসলে কাজটি খুবই সহজ। একটু দেখেশুনে আগ্রহ নিয়ে কাজটি শুরু করলে খুব সহজেই তা করা যায়। হার্ডওয়্যার সংযোজন নিয়ে যাদের ভীতি রয়েছে, তাদের জন্যই এ প্রতিবেদনে কিভাবে নিজ হাতে হার্ডওয়্যার সংযোজন করা হয়, তা চিত্রসহ পর্যায়ক্রমে আলোচনা করা হলো।

আপনি হার্ডওয়্যার অ্যাসেম্বলিং সম্পর্কে একেবারেই নতুন বা কিছুই জানেন না, হঠাৎ জরুরি প্রয়োজনের সময় আপনার কমপিউটারে কোনো সমস্যা দেখা দিল, তখন আপনি কী করবেন? আপনার কাজ হবে দোকানে নিয়ে গিয়ে তা ঠিক করিয়ে আনা। আর তার জন্য কষ্ট করে কমপিউটার ক্যাসিং বগলদাবা করে হন্যে হয়ে ছুটতে হবে দোকানে, তাতে আরো যোগ হবে যাতায়াত খরচ, সময়ের অপচয় এবং সেই সাথে কিছুটা দুশ্চিন্তাও। অথচ হার্ডওয়্যার অ্যাসেম্বলিং বা ট্রাবলশূটিং সম্পর্কে আপনার সামান্য কিছু জ্ঞান থাকলে এত কষ্ট করতে হবে না। ঘরে বসে কয়েক মিনিটের মধ্যে আপনি কমপিউটার নিজেই ঠিক করে ফেলতে পারবেন।

নিজ হাতে সংযোজন করার উপকারিতা

যারা নিজ হাতে কমপিউটার অ্যাসেম্বলিং করবেন তাদের বেশ কিছু লাভ হবে : ০১. তারা জানতে পারবেন কমপিউটারের কোন যন্ত্রাংশ কোথায় লাগাতে হয় এবং তারা কিভাবে একত্রে কাজ করে, ০২. কমপিউটার হার্ডওয়্যার বা কমপিউটারের অভ্যন্তরীণ অংশের সাথে ভালোভাবে পরিচিতি লাভ করবেন, ০৩. হার্ডওয়্যার সম্পর্কে ভালো ধারণা পাবেন, ০৪. হার্ডওয়্যারজনিত ছোটখাটো সমস্যা খুব সহজেই সমাধান করতে পারবেন, ০৫. পিসি আপগ্রেড করার ব্যাপারে ভালো ধারণা করতে পারবেন, ০৬. আলাদাভাবে নতুন কেনা কোনো যন্ত্রাংশ খুব সহজেই লাগিয়ে নিতে পারবেন, ০৭. এতে আপনার কিছু টাকা বাঁচবে এবং সেই সাথে নতুন একটি বিষয় শেখার আনন্দ তো রয়েছেই।

হার্ডওয়্যার সংযোজন

প্রথমেই যন্ত্রাংশগুলো লাগানোর জন্য ভালো দেখে জায়গা বাছাই করে নিন, যেখানে পর্যাপ্ত আলো বিদ্যমান। এরপর বিভিন্ন আকারের স্ক্রু লাগানোর জন্য একটি ভালো স্টার হেডেড স্ক্রু-ড্রাইভার নিতে হবে। যন্ত্রাংশগুলো মাদারবোর্ডে লাগানোর ক্ষেত্রে লক্ষ রাখতে হবে, যাতে করে তাদের মাঝে যথেষ্ট ফাঁকা জায়গা থাকে এবং ক্যাবলগুলো জট পাকিয়ে বা ফ্যানের সাথে না লেগে থাকে।

প্রসেসর সংযোজন

বাজারে আগে পিনযুক্ত প্রসেসর ছিল এবং সেগুলোকে মাদারবোর্ডের সকেটের ছিদ্রে বসানো হতো। কিন্তু বর্তমানের প্রসেসরগুলোয় সাধারণত পিন ব্যবহার করা হয় না, বরং মাদারবোর্ডের প্রসেসরের জন্য বরাদ্দ সকেটেই পিন থাকে এবং প্রসেসরগুলোয় পিনের সমানসংখ্যক ছিদ্র থাকে। যারা নতুন পিসি কিনবেন, তাদের সবারই পিন ছাড়া প্রসেসর কিনতে হবে। কারণ এখন পিনযুক্ত প্রসেসর ও সাপোর্টেড মাদারবোর্ডের সংখ্যাও খুব কম। অনেকের হয়তো পুরনো পিনযুক্ত প্রসেসর কোনো কারণে খুলে লাগাতে হতে পারে, তাই দুই ধরনের প্রসেসর সংযোজন সম্পর্কেই আলোচনা করা হলো-





প্রথমেই মাদারবোর্ডে বর্গাকার প্রসেসরের স্লট বা সকেটটির পাশে থাকা লিভারকে টেনে ওপরের দিকে তুলুন, তারপর প্লেটটি ওপরে তুলুন। পিনবিহীন প্রসেসরের ক্ষেত্রে লক্ষ করুন, প্রসেসরের নিচের দিকে বর্গাকারে কয়েক সারিতে অনেকগুলো ছিদ্র সাজানো আছে। কিন্তু ভালো করে খেয়াল করলেই দেখতে পাবেন সারির মধ্যের কিছু ছিদ্র বন্ধ করা এবং মাদারবোর্ডের সকেটটির দিকে নজর দিলেও দেখা যাবে সেখানের পিনের সারির মধ্যে কয়েকটি পিন নেই । এখন প্রসেসরের ছিদ্রগুলো সকেটের পিনের সাথে মিলিয়ে তা স্থাপন করে আলতো চাপ প্রয়োগ করুন, দেখবেন খুব মসৃণভাবে প্রসেসর সকেটে ঢুকে যাবে। আর যদি পিন ও ছিদ্রের অবস্থান এক না থাকে তবে শত চেষ্টা করেও প্রসেসর সকেটে ঢোকাতে পারবেন না বরং এতে করে পিন ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। প্রসেসর সকেটে স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হলে প্লেটটি নামিয়ে প্রসেসরটিকে ঢেকে তারপর লিভারটি টেনে আবার যথাস্থানে লাগান। পুরনো পিনযুক্ত প্রসেসরকে সকেটে স্থাপনের জন্য একইভাবে পিনের সাথে ছিদ্রগুলোর অবস্থান মিলিয়ে হাল্কা চাপ দিয়ে আটকে দিন। এসব সকেটে শুধু লিভার থাকে কোনো প্লেট থাকে না।



প্রসেসরের সাথে প্রসেসরের জন্য কুলিং ফ্যান দেয়া থাকে, তবে ইচ্ছে করলে আপনি আরো ভালোমানের কুলিং ফ্যান আলাদাভাবে কিনে নিতে পারেন। কুলিং ফ্যানটি হিট সিঙ্কের (তামার অংশ) সাথে স্ক্রু দিয়ে যুক্ত থাকে সেটি খোলার দরকার নেই, কিন্তু অনেক দিন ব্যবহারের পর হিট সিঙ্ক ও ফ্যানে ময়লা জমা হয়। তখন ফ্যানটি খুলে হিট সিঙ্কটি ভালোভাবে পরিষ্কার করে আবার লাগাতে হয়। তা না হলে ফ্যানের কার্যক্ষমতা কমে যায়। হিট সিঙ্কসহ ফ্যানটি লাগানোর জন্য হিট সিঙ্কের পাশের দুটো ক্লিপ বা লিভার টেনে ওপরে তুলতে হবে, তারপর হিট সিঙ্কের নিচের প্রান্তটি প্রসেসরের ওপরে বসিয়ে ক্লিপগুলো আবার নামিয়ে দিতে হবে। প্রসেসরের সকেটের বাম পাশে মাদারবোর্ডে চার পিনযুক্ত পাওয়ার পোর্ট আছে যেখানে ফ্যানের কানেক্টরটি লাগাতে হবে চিত্রের মতো করে।

ক্যাসিংয়ে মাদারবোর্ড সংযোজন




ক্যাসিংয়ে মাদারবোর্ড বসানোর জন্য প্রথমে ক্যাসিংয়ের ঢাকনাটি খুলে ফেলুন। তারপর ক্যাসিংয়ের খোলা অংশ ওপরের দিকে রেখে ক্যাসিংকে শুইয়ে দিন। এখন মাদারবোর্ডের পোর্টগুলো ক্যাসিংয়ের পেছনের অংশ দিয়ে যাতে দেখা যায় সে জন্য ফেক-প্লেট বা ব্যাকপ্লেটটি সরিয়ে ফেলুন। তাহলেই মাউস, কীবোর্ড, বিল্ড-ইন সাউন্ডকার্ডের পোর্ট ও অন্যান্য পোর্টের জন্য বিভিন্ন আকারের ফুটো করা আছে। এখন মাদারবোর্ডটি নিয়ে ক্যাসিংয়ের মধ্যে এমনভাবে রাখতে হবে যাতে মাদারবোর্ডের রিয়ার প্যানেলের পোর্টগুলো ব্যাকপ্লেটটি যেখান থেকে সরানো হয়েছে সেই অংশের দিকে থাকে। মাদারবোর্ড বসানোর পর দেখতে হবে পোর্টগুলো পেছনের ফুটো দিয়ে সঠিকভাবে বের হয়েছে কি-না। এখনকার মাদারবোর্ডগুলোর সাধারণত এটিএক্স, মাইক্রো এটিএক্স ও মিনি এটিএক্স ফর্ম ফ্যাক্টরযুক্ত, যা দিয়ে মাদারবোর্ডের আকার বোঝা যায়। তাই যেকোনো এটিএক্স ক্যাসিংয়ে খুব সহজেই এগুলো বসানো যায়। মাদারবোর্ডের আকার অনুসারে এর সাথে দেয়া স্ক্রু হোল্ডারগুলো জায়গামতো বসিয়ে স্ক্রু ব্যবহার করে এটিকে ক্যাসিংয়ের সাথে ভালোভাবে লাগিয়ে দিন।

ক্যাসিংয়ের পাওয়ার সাপ্লাই থেকে অনেকগুলো পাওয়ার ক্যাবল বের হয়েছে সেখান থেকে ATX পাওয়ার কানেক্টরটি নিয়ে মাদারবোর্ডের ATX পাওয়ার কানেক্টরে (মেইনপাওয়ার) যুক্ত করুন (চিত্র-১০)। এরপর মাদারবোর্ড থেকে অন্যান্য অংশে যেমন- কুলিং ফ্যান, হার্ডডিস্কের লাইট, ক্যাসিংয়ের পাওয়ার ও রিসেট বাটন প্রভৃতিতে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য কিছু কানেক্টর যুক্ত করতে হয়, এগুলোকে ফ্রন্ট প্যানেল কানেক্টর বলা হয়। সাধারণত প্রতিটি কানেক্টরের গায়ে ও মাদারবোর্ডের পিনগুলোর পাশে নাম দেয়া থাকে। মাদারবোর্ডের সাথে দেয়া ম্যানুয়েল বা নির্দেশিকাতে এসব কানেক্টর ও পিনগুলোর অবস্থান ও সংযোগ পদ্ধতি দেয়া থাকে, প্রয়োজনে সেটির সহায়তা নিতে পারেন। নিচে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্রন্ট প্যানেল কানেক্টরের নাম দেয়া হলো-

০১. পাওয়ার সুইচ :



এটির কানেক্টরের গায়ে POWER SW বা PWR SW লেখা থাকতে পারে। এটি সংযোজন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি না লাগালে ক্যাসিংয়ের সামনের পাওয়ার সুইচ চেপে কমপিউটার ওপেন করার পর কোনো সবুজ বাতি জ্বলবে না। কিছু ক্ষেত্রে সবুজ বাতির পাশাপাশি আলোকোজ্জ্বল ডিজিটাল ডিসপ্লে দেয়া থাকে এবং তাতে সিস্টেমের তাপমাত্রাসহ আরো অনেক তথ্য প্রদর্শিত হয়।

০২. রিসেট সুইচ :

এর কানেক্টরের গায়ে Reset কথাটি লেখা থাকে, এটি লাগালে পিসি কখনো হ্যাং করলে রিসেট বাটনটি চেপে কমপিউটার রিবুট করতে পারবেন।

০৩. হার্ডডিস্কের এলইডি লাইট :

এটি লাল রংয়ের লাইট এবং হার্ডডিস্ক যে কাজ করছে তা এটির জ্বলা-নেভা দেখে বোঝা যায়।

০৪. ফ্রন্ট প্যানেলের ইউএসবি :

অনেক ক্যাসিংয়ের সামনে দুটি ইউএসবি পোর্ট থাকে, এগুলোকে সচল করার জন্য কানেকশন দেয়া জরুরি।

০৫. ফ্রন্ট প্যানেলের অডিও :

অনেকেই গান শোনার জন্য হেডফোন ব্যবহার করেন, কিন্তু হেডফোনটি যদি ক্যাসিংয়ের রিয়ার প্যানেলের সংযোগ থেকে আনা হয়, তাহলে তারের স্বল্পতা সৃষ্টি হতে পারে, তাই ফ্রন্ট প্যানেলটি সচল করা দরকার।

মাদারবোর্ডের ম্যানুয়াল দেখে ও কানেক্টরগুলো চিহ্নিত করে পাওয়ার সুইচ, রিসেট সুইচ ও হার্ডডিস্ক এলইডির (LED) জন্য কানেক্টরগুলো সংযোজন করুন। এরপর ফ্রন্ট প্যানেল ইউএসবি কানেক্টর লাগানোর জন্য প্রথমে ক্যাসিংয়ের ইউএসবি কানেক্টর আলাদা করে চিহ্নিত করুন। প্রতিটি ইউএসবি কানেক্টরে চারটি করে পিন থাকে। প্রতিটি কানেক্টরের ১ম পিনটি থাকে পাওয়ার ও ৪র্থ পিনটি থাকে গ্রাউন্ড কানেক্টরের জন্য ও ২য় ও ৩য় পিন দুটি যথাক্রমে ডাটা নেগেটিভ ও ডাটা পজিটিভ পিন। এছাড়া কিছু মাদারবোর্ডে IEEE ১৩৯৪ বা ফায়ারওয়্যার কানেক্টর দেখা যায় (চিত্র-১২), যার ডাটা ট্রান্সফারের ক্ষমতা সেকেন্ডে ন্যূনতম ১০০ থেকে ৪০০ মেগাবাইট পর্যন্ত। এর কানেক্টরগুলো বিভিন্ন সংখ্যার পিনের হয়ে থাকতে পারে। ফায়ারওয়্যার পোর্ট সাধারণত ভিডিও ক্যামেরা, এক্সটার্নাল ও পোর্টেবল হার্ডড্রাইভ, সিডি বার্নার ও আইপডে ব্যবহার হয়ে থাকে খুবই দ্রুতগতিতে ডাটা ট্রান্সফারের জন্য। এই পোর্ট আপনার পিসিতে থাকলে উল্লিখিত ডিভাইসগুলো থেকে ডাটা বিনিময় হবে খুবই দ্রুততর।

র্যা ম সংযোজন

এসডি, আরডি ও ডিডিআর র্যাডমের গঠনগত পার্থক্য খুবই কম। পার্থক্য থাকে শুধু গোল্ডেন কানেক্টরে বিদ্যমান খাঁজের বা নচের সংখ্যা ও অবস্থানের। তাই যেকোনো এক ধরনের র্যারমের সংযোজন পদ্ধতি জানলেই অন্যগুলো সংযোজন করায় কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। সাধারণত প্রতি মাদারবোর্ডে ২-৪টি র্যাযম স্লট থাকে। কোন মাদারবোর্ড কোন ধরনের র্যাওম সাপোর্ট করবে, তা মাদারবোর্ডের বক্সের গায়ে বা ম্যানুয়েলে লেখা থাকে। আগে আপনার মাদারবোর্ড সাপোর্ট করে সে রকম র্যা ম বাছাই করে নিন। সাধারণত মাদারবোর্ডে বিদ্যমান র্যায়ম স্লটগুলোয় ক্রমিক সংখ্যা দেয়া থাকে। যদি মাদারবোর্ডে তিনটি র্যানম স্লট থাকে তবে তাদের পর্যায়ক্রমে ০, ১ ও ২ নামে চিহ্নিত করা থাকে। যদি একটি র্যা ম লাগানো হয় তাহলে সেটিকে ০ নাম্বার চিহ্নিত স্লটে স্থাপন করতে হয় এবং একের অধিক র্যা ম সংযোজনের প্রয়োজন হলে তা পর্যায়ক্রম বজায় রেখে লাগানো হয়। উল্লেখ্য, ০ নাম্বার চিহ্নিত র্যা ম স্লটটি প্রসেসরের স্লটের কাছাকাছি থাকে।



প্রথমে মাদারবোর্ডে র্যা/ম স্লটের অবস্থান চিহ্নিত করে নিন। দেখবেন প্রতিটি রম স্লটের দুই পাশে দুটো সাদা রংয়ের (বেশির ভাগ মাদারবোর্ডেই এটি সাদা রংয়ের হয়) লিভার সংযুক্ত রয়েছে। প্রথমেই লিভার দুটোকে বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে আলতো চাপ দিয়ে নামিয়ে রাখুন। তারপর র্যায়মের গোল্ডেন কানেক্টরের খাঁজ আর র্যারম স্লটে থাকা খাঁজ একই অবস্থানে আছে কি না তা যাচাই করে বুড়ো আঙ্গুল ও তর্জনী ব্যবহার করে রমটি স্লটে স্থাপন করুন এবং খাড়াভাবে একটু জোরে চাপ দিয়ে র্যাড়মটি পুরোপুরিভাবে স্লটে স্থাপন করুন। র্যাকম ঠিকমতো বসে থাকলে লিভার দুটো ওপরের দিকে উঠে আসবে, এরপর লিভার দুটোকে র্যািমের দুইপাশে বিদ্যমান খাঁজে আটকে দিন। যদি লিভার দুটো র্যারমের পাশের খাঁজে না লাগে তাহলে বুঝতে হবে র্যা ম ঠিকমতো লাগানো হয়নি, তাহলে পুনরায় চাপ দিয়ে সঠিকভাবে র্যা মটি স্লটে আটকে দিন। একের অধিক র্যা ম লাগালে একই পদ্ধতি অনুসরণ করে সেটিকে স্লটে স্থাপন করুন। র্যা্ম কখনো খোলার দরকার হলে লিভার দুটোকে নামিয়ে সাবধানে র্যা মকে ওপরের দিকে টেনে স্লট থেকে তুলে ফেলুন, তবে খুলতে গিয়ে পাশাপাশি নড়াচড়া না করাই ভালো, তাহলে গোল্ডেন কানেক্টর অংশটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

গ্রাফিক্স কার্ড সংযোজন

পূর্বে গ্রাফিক্স কার্ড বলতে ভিজিএ কার্ডকে বোঝাতো এবং এগুলো লাগানোর জন্য মাদারবোর্ডে কোনো আলাদা স্লট দরকার হতো না। সাধারণ পিসিআই স্লটগুলোতেই এক্সপানশন কার্ড হিসেবে লাগানো যেত। ভিজিএ’র জায়গা দখল করে বাজারে এসেছিলো এজিপি। কিন্তু বর্তমানে এজিপি সমর্থিত মাদারবোর্ডের প্রচলনও কমে গেছে এবং সেইখানে পিসিআই এক্সপ্রেস স্লটযুক্ত মাদারবোর্ডের প্রচলন বেড়েছে। পাঠকদের সুবিধার্থে এখানে এজিপি ও পিসিআই এক্সপ্রেস উভয় ধরনের স্লটের মধ্যে গ্রাফিক্স কার্ড সংযোজন পদ্ধতি দেখানো হলো-



এজিপি স্লটটি সাধারণত পিসিআই স্লটের থেকে আকারে ভিন্ন ও গাঢ় খয়েরি রংয়ের হয়ে থাকে। মাদারবোর্ডের পিসিআই স্লটগুলোর ওপরের দিকে অর্থাৎ মাদারবোর্ডের মাঝামাঝি স্থানে এজিপি স্লটটি অবস্থিত। এজিপি কার্ড লাগানোর আগে সর্বপ্রথম এজিপি স্লটটি শনাক্ত করে নিন। এজিপি গ্রাফিক্স কার্ডের স্লটেও র্যারম স্লটের মতো খাঁজে ভাগ করা থাকে এবং এজিপি কার্ডের গোল্ডেন কানেক্টরেও অনুরূপ খাঁজ থাকে। এজিপি কার্ড লাগানোর জন্য এটিকে স্লটে বসানোর আগে স্লটের সাথে একই লাইনে ক্যাসিংয়ের পেছন দিকে অবস্থিত টিনের পাতলা পাতগুলোর একটা সরিয়ে নিতে হবে। পাত সরানোর জন্য ক্যাসিংয়ের ভেতর দিক থেকে পাতটির ওপর জোরে চাপ দিলেই সেটি খুলে আসবে, তারপর পাতটিকে সরিয়ে রাখুন বা ফেলে দিন। সেই অংশ দিয়ে গ্রাফিক্স কার্ডের পেছনের দিকের পোর্টগুলো ক্যাসিংয়ের বাইরে বের হয়ে থাকবে। এখন র্যা মের মতোই স্লটের খাঁজ ও কার্ডের খাঁজ মিলিয়ে কার্ডটি স্লটে স্থাপন করুন, যাতে করে কার্ডের পোর্টযুক্ত অংশটুকু ক্যাসিং থেকে সরিয়ে ফেলা পাতের দিকে থাকে। সাধারণত কার্ডটি সঠিকভাবে লাগলে ক্লিক জাতীয় একটা শব্দ হয়, এটি হয় এজিপি স্লটে থাকা একটি ক্লিপের জন্য, যা কার্ডটি ঠিকমতো লাগার পর কার্ডের নির্দিষ্ট ছিদ্রে সংযুক্ত হয় এবং কার্ডটিকে নড়াচড়ার হাত থেকে রক্ষা করে। তবে আরো ভালোভাবে আটকে রাখার জন্য কার্ডের পোর্টযুক্ত স্থানটিতে একটি স্ক্রু লাগানোর ব্যবস্থা আছে, সেই স্থানে স্ক্রুটি ক্যাসিংয়ের বাঁদিকের ভেতরের দিকে উঁচু হয়ে থাকা অংশে অবস্থিত ছিদ্রের সাথে ভালোভাবে লাগিয়ে দিতে হবে।

পিসিআই এক্সপ্রেস গ্রাফিক্স কার্ডগুলো লাগানোর পদ্ধতিও এজিপির মতো। শুধু খেয়াল রাখতে হবে পিসিআই স্লটটি এজিপি স্লট থেকে বড় আকারের এবং যে মাদারবোর্ডে এজিপি স্লট আছে সেটায় পিসিআই এক্সপ্রেস স্লট নেই।

হার্ডডিস্ক সংযোজন

আইডিই হার্ডডিস্কগুলো এখন বাজারে পাওয়া বেশ কঠিন ব্যাপার। সাটা পোর্টের হার্ডডিস্কের ডাটা ট্রান্সফার করার ক্ষমতা আইডিই হার্ডডিস্কের তুলনায় বেশি হওয়ায় এগুলোর জনপ্রিয়তা এখন বেশ তুঙ্গে। তবে বাজারে SATA 1 ও SATA 2 উভয় ধরনের হার্ডডিস্ক পাওয়া যায়। পারফরমেন্সের দিক দিয়ে SATA 2 হার্ডডিস্ক SATA 1 হার্ডডিস্কের চেয়ে অধিক গতিসম্পন্ন। তবে যে মাদারবোর্ডে SATA 1 হার্ডডিস্কের জন্য যে পোর্ট আছে সেটিতে SATA 2 হার্ডডিস্ক ব্যবহার করা যাবে, তবে পারফরমেন্স পাওয়া যাবে SATA 1 হার্ডডিস্কের সমান। হার্ডডিস্ক হচ্ছে প্রাইমারি মেমরি। অপারেটিং সিস্টেমসহ অন্য অ্যাপ্লিকেশনগুলো এখানেই সুরক্ষিত থাকে, সেই সাথে সিডি ড্রাইভও একটি প্রাইমারি ডিভাইস এবং উইন্ডোজের লাইভ সিডি দিয়ে কমপিউটার পরিচালনা করা যায় সিডি ড্রাইভ থেকেই। তাই যখন সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট থেকে কোনো ডাটা খোঁজা হয় তখন তা হার্ডডিস্ক ও সিডিরম উভয় জায়গাতেই হানা দেয়। কিন্তু যদি ব্যবহারকারী সিডিরমে ডাটা খুঁজে সময় নষ্ট করতে না চান তাহলে হার্ডডিস্ককে মাস্টার এবং সিডি ড্রাইভকে স্লেভ করে দিলেই হবে (যারা একই আইডিই ক্যাবলে হার্ডডিস্ক ও অপটিক্যাল ড্রাইভ ব্যবহার করতে চান)? যারা দুটো হার্ডডিস্ক ব্যবহার করবেন তাদের ক্ষেত্রেও একটিকে (যেটাতে অপারেটিং সিস্টেম থাকবে) মাস্টার ও অন্যটিকে স্লেভ করে নিতে হবে। এখন আসা যাক কিভাবে হার্ডডিস্ককে মাস্টার করা যায় সেই কথায়।




প্রতিটি হার্ডডিস্ক ও সিডি ড্রাইভের মাস্টার ও স্লেভ করার পদ্ধতি এক নয়, তবে হার্ডডিস্ক বা সিডি রমের গায়ে জাম্পার কনফিগারেশন টেবিল দেয়া থাকে সেটি দেখে সহজেই ডিভাইসকে মাস্টার ও স্লেভে পরিণত করা যায়। আইডিই ও সাটা হার্ডডিস্কের মাদারবোর্ডের সাথে সংযোজন পদ্ধতি এক না হলেও ক্যাসিংয়ে স্থাপন করার পদ্ধতি একই রকম। নিচে উভয় ধরনের হার্ডডিস্ক সংযোজনের পদ্ধতি উল্লিখিত হলো-

প্রথমেই হার্ডডিস্কের পেছনের অংশে লক্ষ করুন। সেখানে বাম দিকে দুই সারিতে সাজানো ৩৯ পিনের আইডিই পোর্ট ও ডান দিকের বড় আকারের ৪ পিনের পাওয়ার ক্যাবল যুক্ত করার পোর্টের মাঝখানে দুই সারিতে ১০ পিনের আরেকটি ঘর আছে। এখানেই এই পিনগুলোর মধ্যে জাম্পার লাগানোর মাধ্যমে প্রথমে একে মাস্টার করে নিন। তারপর ফিতের মতো দেখতে আইডিই ক্যাবলটি নিন। লক্ষ করুন ক্যাবলটি অনেকগুলো ক্যাবলের সম্মিলিত রূপ এবং একদিকের একটি তার লাল রংয়ের। এখন ক্যাবলের মাথার কানেক্টরটি হার্ডডিস্কের আইডিই পোর্টের পিনের সাথে যুক্ত করার সময় দেখতে হবে লাল দাগটি সবসময় ডানদিকে থাকবে। এছাড়া আরেকটি ব্যাপার খেয়াল রাখতে হবে তা হচ্ছে ক্যাবলের কানেক্টরে ৩৯টি ছিদ্র আছে এবং পিনের সংখ্যাও রয়েছে ৩৯। সাধারণত নিচের সারির মাঝামাঝিতে একটা পিনও থাকে না। তাই কানেক্টরটি পিনে লাগানোর আগে পিন ও কানেক্টরের ছিদ্রের অবস্থান দেখে লাগানোই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ উল্টো করে লাগাতে চেষ্টা করলে পিন ভেঙ্গে বা বেঁকে যাবার সম্ভাবনা থাকে। এখন আইডিই ক্যাবলের অন্য প্রান্তের কানেক্টরটি মাদারবোর্ডের প্রাইমারি আইডিই (IDE 0) পোর্টের সাথে যুক্ত করতে হবে। তারপর হার্ডডিস্কে ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই করার জন্য পাওয়ার ক্যাবল যুক্ত করতে হবে। চিত্র-১৯-এ দেখানো ক্যাবলটি হচ্ছে পাওয়ার ক্যাবল এবং এটিকে হার্ডডিস্কের ৪ পিনের পাওয়ার পোর্টের সাথে সংযুক্ত করতে হবে। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে পাওয়ার ক্যাবলের চারটি তারের মধ্যে হলুদ তারটি লাগানোর সময় ডান দিকে থাকবে। এছাড়া পাওয়ার ক্যাবলের সাদা কানেক্টরের গায়ে আড়াআড়িভাবে উঁচু করে দাগ দেয়া থাকে, সেই অংশটি সবসময় লাগানোর সময় নিচে থাকবে।

আইডিই হার্ডডিস্কের মতো সাটা হার্ডডিস্ককেও প্রথমে মাস্টার (সাধারণত এ কাজটি বর্তমানের সাটা হার্ডডিস্কে করা লাগে না) করে নিতে হবে হার্ডডিস্কের গায়ে আকাঁ জাম্পার কনফিগারেশন টেবিল দেখে। সাটা ক্যাবল চ্যাপ্টা আকারের ও গাঢ় গোলাপী বর্ণের হয়ে থাকে । এর ডাটা ট্রান্সফারের স্পিড আইডিই ক্যাবলের থেকে বেশি। ক্যাবলের একপ্রামেত্মর কানেক্টরটি হার্ডডিস্কের পেছনের সাটা পোর্টের সাথে যুক্ত করে নিন এবং অন্য প্রান্তটি মাদারবোর্ডের সাটা পোর্টের (চিত্র-১৭) সাথে যুক্ত করতে হবে। কিছু সাটা পোর্টের হার্ডডিস্কের পাওয়ার সংযোজন পাওয়ার ক্যাবল দিয়েই করা যায়, তবে কিছু ক্ষেত্রে আলাদা কালো বর্ণের দশ পিনযুক্ত পাওয়ার ক্যাবল থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে সেই পাওয়ার ক্যাবল সংযোজন করতে হবে।

ক্যাসিংয়ের ভেতরে সামনের দিকে হার্ডডিস্ক লাগানোর জন্য নির্দিষ্ট জায়গা বা র্যা ক দেয়া থাকে এবং ক্যাসিংভেদে সাধারণত ৩-৪টি হার্ডডিস্ক লাগানোর মতো জায়গা বরাদ্দ থাকে। ক্যাসিংয়ে লাগানোর ক্ষেত্রে সব সময় ওপরের পিঠ ওপরের দিকে রাখতে হবে এবং পেছনের পোর্টযুক্ত অংশ ক্যাসিংয়ের ভেতরের দিকে রাখতে হবে, তারপর র্যায়কে ঢোকাতে হবে। হার্ডডিস্কের দুই পাশে ৩টি করে মোট ৬টি ছিদ্র আছে, ক্যাসিংয়ের র্যা কে হার্ডডিস্ক স্থাপন করার পর র্যা কের স্ক্রু লাগানোর ছিদ্রের সাথে হার্ডডিস্কের পাশের ছিদ্র এক লাইন বরাবর রেখে স্ক্রু দিয়ে ভালোভাবে আটকে দিন। ক্যাসিংয়ের দুই পাশ খোলা থাকলে অন্য পাশ থেকেও র্যারকের সাথে হার্ডডিস্ক স্ক্রু দিয়ে আটকে দিন। হার্ডডিস্কটি লাগানোর ক্ষেত্রে ৩-৪টি স্ক্রু ব্যবহার করুন, তা না হলে হার্ডডিস্কটির নড়াচড়া করার সম্ভাবনা থাকে।

অপটিক্যাল ড্রাইভ সংযোজন

সাধারণত সিডি, সিডি রাইটার, ডিভিডি, ডিভিডি রাইটার ও কম্বোড্রাইভের গঠনপ্রণালী একই ধরনের, তাই যেকোনো একটি অপটিক্যাল ড্রাইভ লাগানোর পদ্ধতি জানলেই আপনি যে ধরনের ড্রাইভই কিনে থাকুন না কেন, তা অনায়াসে লাগাতে পারবেন। তবে এখন বাজারে আইডিই স্ট্যান্ডার্ডের সিডি/ডিভিডি রমের পাশাপাশি সাটা অপটিক্যাল ড্রাইভও পাওয়া যায়। আইডিই অপটিক্যাল ড্রাইভ লাগানোর পদ্ধতি আইডিই হার্ডডিস্ক লাগানোর অনুরূপ এবং অপটিক্যাল ড্রাইভের পেছনের পোর্টগুলোও প্রায় একই ধরনের হয়ে থাকে।



অপটিক্যাল ড্রাইভে আইডিই ক্যাবল সংযোজন করার জন্য প্রথমে ক্যাবলের একপ্রান্ত মাদারবোর্ডের সেকেন্ডারি আইডিই পোর্টের (IDE 1) সাথে সংযুক্ত করতে হবে, যদি মাত্র একটি আইডিই পোর্ট থাকে তবে তাতে লাগাতে হবে এবং অন্যপ্রান্তের দুটো কানেক্টরের একটা অপটিক্যাল ড্রাইভে লাগাতে হবে। এক্ষেত্রে যদি দুটো অপটিক্যাল ড্রাইভ ব্যবহার করতে চান, তাহলে অপর আইডিই কানেক্টরটি সেই ড্রাইভে লাগান ও জাম্পার সেটিংয়ের মাধ্যমে একটি ড্রাইভকে মাস্টার ও অপরটিকে স্লেভ করে দিন। জাম্পার সেটিং করার জন্য ড্রাইভের গায়ের নির্দেশিকাটি দেখে নিন। ফ্লপি কানেক্টরও পাওয়ার ক্যাবল কেসিংয়ে দেয়া থাকে। ইচ্ছে করলে বা ফ্লপি ড্রাইভ লাগালে তা অপটিক্যাল ড্রাইভের মতো করে লাগিয়ে দিলেই হবে।

হার্ডডিস্কের তুলনায় অপটিক্যাল ড্রাইভগুলোতে একটা পোর্ট বেশি থাকে এবং তা হচ্ছে অডিও আউট পোর্ট। এখানে সিডি অডিও ক্যাবলের একপ্রান্ত যুক্ত করতে হয় ও অন্যপ্রান্ত সাউন্ড কার্ডের সাথে যুক্ত করতে হয়। এটি দেয়া হয় সিডি ড্রাইভ থেকে সরাসরি অডিও সিডি দিয়ে গান শোনার জন্য। এক্ষেত্রে সিডি ড্রাইভের সামনে অডিও আউট পোর্ট থাকে।

টিভি কার্ড সংযোজন

টিভি কার্ড দুই ধরনের : এক্সটারনাল ও ইন্টারনাল। ইন্টারনাল টিভি কার্ড টিভির অনুষ্ঠান কেটে রাখার জন্য খুবই কাজে দেয়। কিন্তু এক্সটারনাল টিভি কার্ডে অনুষ্ঠান কেটে রাখার ব্যবস্থা নেই। তবে পিসি না ছেড়েই এক্সটারনাল টিভি কার্ড ব্যবহার করে মনিটরে টিভির অনুষ্ঠান দেখা যায়। এক্সটারনাল টিভি কার্ডের সংযোজন খুবই সহজ, তাই এখানে ইন্টারনাল টিভি কার্ড লাগানোর পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। ইন্টারনাল টিভি কার্ড লাগানোর জন্য ক্যাসিংয়ের ব্যাক প্যানেলের কার্ড যেই পিসিআই স্লটে লাগানো হবে তার সংলগ্ন ফেক প্লেট বা পাতলা টিনের পাতটি ভেতর থেকে চাপ দিয়ে খুলে নিতে হবে। টিভি কার্ডের গোল্ডেন কানেক্টরেও গ্রাফিক্স কার্ড ও র্যা মের মতোই খাঁজ থাকে, সেই খাঁজ ও পিসিআই স্লটের খাঁজ মিলিয়ে কার্ডটি স্লটে স্থাপন করুন। পিসিআই স্লটগুলোতে বিভিন্ন কার্ডকে আটকে রাখার জন্য কোনো লিভার থাকে না বা এজিপি স্লটের মতো কোনো প্রকার ক্লিপও থাকে না। তাই পিসিআই পোর্টে কার্ডগুলোকে ভালোভাবে আটকে রাখার জন্য কার্ডের পোর্টযুক্ত স্থানটিতে একটি স্ক্রু লাগানোর ব্যবস্থা আছে, সেই স্থানে স্ক্রুটি ক্যাসিংয়ের বাঁদিকের ভেতরের দিকে উঁচু হয়ে থাকা অংশে অবস্থিত ছিদ্রের সাথে ভালোভাবে লাগিয়ে দিতে হবে।

সাউন্ড কার্ড, ল্যান কার্ড ও মডেম সংযোজন

সাধারণত এখনকার মাদারবোর্ডে বেশ ভালোমানের মাল্টি চ্যানেলের বিল্ট-ইন সাউন্ড কার্ড দেয়াই থাকে। তবুও কেউ যদি আরো ভালোমানের সাউন্ড কার্ড পিসিতে ব্যবহার করতে চান, তাহলে তাকে তা পিসিআই স্লটে লাগাতে হবে। লাগানোর প্রক্রিয়া হুবহু টিভি কার্ড সংযোজনের মতোই, তাই এ সম্পর্কে তেমন আলোচনার প্রয়োজন নেই। নতুন মাদারবোর্ডগুলোতে ল্যান কার্ড দেয়া থাকে তবে মডেম দেয়া থাকে না। যারা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানেকশন ব্যবহার করবেন তাদের মডেমের দরকার হবে না। মাদারবোর্ডের সাথে দেয়া ল্যান কার্ডই সে জন্য যথেষ্ট, কিন্তু যারা ডায়ালআপ ইন্টারনেট ব্যবহার করবেন তাদের জন্য ল্যান কার্ড দিয়ে কাজ হবে না মডেম কেনার দরকার হবে। মডেম লাগানোর প্রক্রিয়াও টিভি কার্ড ও সাউন্ড কার্ডের মাতোই।

এক্সপানশন কার্ড

আপনার পিসিতে যদি প্রয়োজনীয় কিছু পোর্টের স্বল্পতা দেখা দেয় বা না থাকে তাহলে সেই পোর্টগুলো এক্সপানশন কার্ডের মাধ্যমে লাগিয়ে নিতে পারেন। এক্সপানশন কার্ডকে এক্সপানশন বোর্ড, এডাপ্টার কার্ড ও এক্সেসরি কার্ডও বলা হয়। বাজারে বিভিন্ন ধরনের এক্সপানশন কার্ড পাওয়া যায়। এগুলোর মধ্যে ইউএসবি পোর্ট, ফায়ারওয়্যার, ইথারনেট পোর্ট, সাটা পোর্ট, টিভি টিউনার ইত্যাদি অন্যতম। অর্থাৎ মনে করুন আপনার একটি মুভি ক্যামেরা আছে এবং এতে ফায়ারওয়্যার পোর্ট বিদ্যমান, কিন্তু আপনার পিসির সাথে তা সংযোগ দেয়ার জন্য কোনো ফায়ারওয়্যার পোর্ট নেই তখন ফায়ারওয়্যার এক্সপানশন কার্ডের মাধ্যমে আপনি পিসিতে এই পোর্ট লাগিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন।

কুলিং ফ্যান

বর্তমানে অনেক ক্যাসিংয়ে পিসিকে ঠান্ডা রাখার জন্য রিয়ার ফ্যান ব্যতীতও ফ্রন্ট ও সাইড ফ্যান থাকতে পারে। এই ফ্যানগুলোকে দুইভাবে পাওয়ার দেয়ার ব্যবস্থা আছে। ইচ্ছে করলে পাওয়ার সাপ্লাইয়ের ক্যাবল ও ফ্যানের পাওয়ার ক্যাবলকে পরস্পরের সাথে জোড়া লাগিয়ে ফ্যানে পাওয়ার নিশ্চিত করা যায়, আবার মাদারবোর্ড থেকেও পাওয়ার দেয়ার ব্যবস্থা থাকে। সেক্ষেত্রে মাদারবোর্ডে Fan 2 লেখা পোর্ট থেকে পাওয়ার নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

ক্যাসিংয়ের ব্যাক প্যানেলে ক্যাবল সংযোজন



পাওয়ার সাপ্লাইয়ের পেছনে ওপরের দিকে (চিত্র-২১) পাওয়ার কানেক্টর লাগানোর জন্য পোর্ট থাকে সেখানে পাওয়ার ক্যাবলটি লাগাতে হবে। কিছু কিছু পাওয়ার সাপ্লাইয়ের পেছনে মেইন পাওয়ার সুইচ এবং ভোল্টেজ সিলেক্টর সুইচ (চিত্র-২১) থাকতে পারে, সেক্ষেত্রে পাওয়ার সুইচ অন করে নিতে হবে এবং ভোল্টেজ সিলেক্টরে ২২০ ভোল্ট সিলেক্ট করে নিতে হবে। উন্নত বিশ্বে ১১০ ভোল্টে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি চলে কিন্তু বাংলাদেশের বৈদ্যুতিক ভোল্টেজ ২২০ ভোল্ট, তাই যদি ভুলে ১১০ ভোল্ট সিলেক্ট করা থাকে তাহলে পাওয়ার সাপ্লাই পুড়ে যাবার আশঙ্কা থাকে।

মাউস ও কীবোর্ড সংযোজন



মাউস ও কীবোর্ডের জন্য ক্যাসিংয়ের রিয়ার প্যানেলের ওপরের দিকে দুটি PS/2 পোর্ট আছে, সেখানে এ দুটোকে লাগাতে হবে। এক্ষেত্রে মনে রাখার বিষয় হচ্ছে হালকা সবুজ পোর্টটি মাউসের জন্য ও হালকা বেগুনি পোর্টটি কীবোর্ডের জন্য। তবে বাজারে বর্তমানে ইউএসবি ও ওয়্যারলেস মাউস-কীবোর্ড পাওয়া যায়। ইউএসবি কীবোর্ড ও মাউস ব্যবহার করতে চাইলে এদের ক্যাবল ইউএসবি পোর্টে লাগাতে হবে, আর ওয়্যারলেসগুলো ব্যবহার করতে চাইলে ইউএসবি পোর্টে মাউস ও কীবোর্ডের সাথে দেয়া ইউএসবি সেন্সর লাগাতে হয়। সেন্সরটি ব্লু-টুথ প্রযুক্তিতে ডিভাইসটির সাথে সংযোগ রাখে।

মনিটর সংযোজন



মনিটর লাগানোর জন্য প্রথমে মনিটরের পাওয়ার ক্যাবলের একপ্রান্ত মনিটরে ও অন্যপ্রান্ত ইউপিএসে লাগাতে হবে। এছাড়া আপনি চাইলে ক্যাসিংয়ের পেছনের পাওয়ার সাপ্লাইয়ের পাওয়ার পোর্টের নিচে অবস্থিত (অনেক ক্যাসিংয়ে থাকে না) পোর্টে মনিটরের পাওয়ার ক্যাবল লাগাতে পারেন। এরপর সিআরটি মনিটরের ভিজিএ কানেক্টরটি মাদারবোর্ডের ভিজিএ পোর্টে (চিত্র-২২) বা আলাদা গ্রাফিক্স কার্ড লাগানো থাকলে তার পেছন দিকের ভিজিএ পোর্টে লাগাতে হবে এবং দুই পাশের প্যাচযুক্ত স্ক্রুগুলো ভালোভাবে লাগিয়ে দিতে হবে। কোনো কারণে পোর্ট থেকে ক্যাবলটি খোলার দরকার হলে প্রথমে স্ক্রু দুটো খুলে তারপর টেনে ভিজিএ কানেক্টরটি খুলতে হবে। আর এলসিডি মনিটর লাগাতে হলে তার ডিভিআই কানেক্টর ডিভিআই পোর্টে লাগাতে হবে।

অডিও ইনপুট ও আউটপুট সংযোজন

স্পিকারের লাইন পিসির সাথে দেয়ার জন্য ক্যাসিংয়ের রিয়ার প্যানেলের বিল্ট-ইন সাউন্ড কার্ডের পোর্টগুলোয় স্পিকারের জ্যাক লাগাতে হবে। জ্যাক ও পোর্ট দুটোতেই রঙ করা থাকে, ফলে লাগানোয় কোনো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। সবুজ জ্যাক সবুজ বা হলুদ পোর্টে ও কালো জ্যাক কালো পোর্টে লাগালেই অডিও আউট বা স্পিকারের লাইন দেয়ার কাজ হয়ে যাবে। এছাড়া গোলাপী রঙের পোর্টটি দেয়া হয় মাইক্রোফোন লাগানোর জন্য। যদি পোর্টগুলোতে রঙ করা না থাকে, তাহলে ছবি দিয়ে বোঝানো থাকে কোনটাতে কোন জ্যাক লাগবে। চিত্র ২০-এ বিল্ট-ইন সাউন্ড কার্ডের পোর্টগুলো দেখানো হয়েছে। তবে যখন আলাদা সাউন্ড কার্ড লাগানো হবে, তখন আর বিল্ট-ইনটি কাজ করবে না এবং সেক্ষেত্রে সেই সাউন্ড কার্ডের পেছনের পোর্টগুলোয় স্পিকারের জ্যাক লাগাতে হবে।



এছাড়া চিত্র-২০-এ প্যারালাল ও সিরিয়াল কমিউনিকেশন পোর্ট দেখা যাচ্ছে। এগুলো সম্পর্কেও না জানালেই নয়। প্যারালাল পোর্ট সাধারণত পুরনো প্রিন্টার ব্যবহার করার জন্য লাগে, কিন্তু নতুন প্রিন্টারগুলো ইউএসবি সাপোর্টেড হওয়ায় এই পোর্টের আর দরকার হয় না। তবু মাদারবোর্ড নির্মাতারা এই পোর্টটি পুরনো প্রিন্টারে ব্যবহার হতে পারে বিধায় এই পোর্ট সরবরাহ করে থাকে। সিরিয়াল পোর্ট আগে ব্যবহার করা হতো নেটওয়ার্ক কানেকশনের জন্য ও গেমিং কন্সোল ডিভাইসসমূহ সংযোজন করার জন্য। কিন্তু বর্তমানে ইথারনেট ও ইউএসবি পোর্ট এর জায়গা অনেক অংশে দখল করে নিয়েছে।

শেষ কথা

পিসি কেনার যাবতীয় পরামর্শ ও হার্ডওয়্যার সংযোজন করে কমপিউটার বানানোর খুঁটিনাটি তো জানা হলো। আশা করা যায়, এখন আপনারা নিজেই নিজের পিসি কিনতে পারবেন বা অন্যকে কিনতে সাহায্য করতে পারবেন এবং নিজ হাতেই হার্ডওয়্যার অ্যাসেম্বলিং করতে পারবেন। আগামী সংখ্যায় হার্ডডিস্ক পার্টিশন, বায়োস সেটআপ অপারেটিং সিস্টেম ইনস্টলেশন ও প্রয়োজনীয় কিছু সফটওয়্যার ইনস্টলেশন করার প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করা হবে।

No comments:

Post a Comment