Saturday, March 27, 2010

সেইফ মোড, উইন্ডোজ স্টার্ট,

অভিজ্ঞ ও অনভিজ্ঞ কমপিউটার ব্যবহারকারীদের মধ্যে এমন অনেক আছেন, যারা বিভিন্ন ধরনের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারসংশ্লিষ্ট অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলায় পড়েন। এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলার মধ্যে অন্যতম একটি হলো অধিকতরভাবে উইন্ডোজ ক্র্যাশ করা অথবা উইন্ডোজ চালু হতে পুরোপুরি ব্যর্থ হওয়া। কমপিউটারে কাজ করতে গেলে এ ধরনের ঝামেলা মাঝেমধ্যে হতেই পারে, সেজন্য আতঙ্কিত হবার কিছু নেই, কেননা সিস্টেম ক্র্যাশ করলে ডাটা হারিয়ে যায় না।


উইন্ডোজ ভিসতায় ‍অ্যাডভান্সড বুট অপশন


উইন্ডোজ এক্সপি’র ‍অ্যাডভান্সড বুট অপশন

লক্ষণীয় সমস্যাটি রেজিস্ট্রি সংক্রান্তে অথবা গুরুত্বপূর্ণ সিস্টেম ফাইলসংশ্লিষ্ট হলে উইন্ডোজ স্বাভাবিকভাবে অপারেট করতে ব্যর্থ হয়। আর যদি তাই হয় অর্থাৎ সমস্যাটি সিস্টেমসংশ্লিষ্ট হলে তাৎক্ষণিকভাবে পরিত্রাণ পাওয়া হয়তো সম্ভব হবে না।


সিস্টেম কনফিগারেশন ‍ইউটিলিটি অপশন

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, আপনি পিসিতে কিছু নতুন সফটওয়্যার ইনস্টল করলেন এবং এর ফলে আপনার পিসি আর স্টার্ট হলো না। এক্ষেত্রে আপনার অবশ্যই করণীয় কাজটি হলো প্রতিবন্ধক সৃষ্টিকারী প্রোগ্রামকে আনইনস্টল করা। তারপরও যদি উইন্ডোজ স্টার্ট না হয়, সেক্ষেত্রে করণীয় কী, তা নিয়ে বিচলিত হবার কিছুই নেই, কেননা উইন্ডোজ ভিসতা ও উইন্ডোজ এক্সপি উভয় অপারেটিং সিস্টেমে রয়েছে সহায়ক বা নিরাপদ টুল, যা ‘সেইফ মোড’ হিসেবে ব্যবহারকারীদের কাছে ব্যাপক পরিচিত। সেইফ মোড কী এবং এই মোড কীভাবে সহায়তা করতে পারে তা ব্যবহারকারীর উদ্দেশে ধাপে ধাপে নিচে বর্ণিত হলো :

ধাপ-১ :

সেইফ মোডে এক্সেসের বেশ কিছু উপায় থাকলেও সহজ পদ্ধতিটি হলো Restart Windows করা অথবা কমপিউটারের সুইচ অন করার সাথে সাথে F8 ফাংশন কী চাপতে থাকুন। এর ফলে উইন্ডোজ এক্সপিতে Windows Advanced Option Menu প্রদর্শিত হবে। এবার কীবোর্ডের অ্যারো কী ব্যবহার করে সিলেক্ট করুন Safe Mode এবং এন্টার চাপুন। লক্ষণীয়, এতে স্ক্রিন কিছুটা ভিন্নভাবে প্রদর্শিত হতে পারে।

ধাপ-২ :

উইন্ডোজ ভিসতায় সেইফ মোড মেনু চালু করতে চাইলে কমপিউটার অন করার সাথে সাথে F8 ফাংশন কী চাপুন। এক্ষেত্রে অপশনটি লেবেল করা থাকে Advanced Boot Option হিসেবে। এবার আগের মতো অ্যারো কী ব্যবহার করে Safe Mode অপশন সিলেক্ট করে এন্টার চাপুন। উইন্ডোজ এক্সপি ও ভিসতা উভয় অপারেটিং সিস্টেমের সেইফ মোড মেনু অপশনে সম্পৃক্ত রয়েছে Safe Mode With Networking লেবেল করা এক এন্ট্রি। এই লেবেল করা শিরোনাম দেখেই বোঝা যায়, এটি নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট এক্সেসকে অনুমোদন করে এবং ড্রাইভার অথবা অন্য সফটওয়্যার ডাউনলোডের প্রয়োজন হলে সেক্ষেত্রে এটি একটি আদর্শ অপশন হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

ধাপ-৩ :

সেইফ মোডে এক্সেস করার আরেকটি পদ্ধতি হলো Start>Run-এ ক্লিক করে msconfig টাইপ করে এন্টার চাপা। উইন্ডোজ এক্সপিতে সিস্টেম কনফিগারেশন ইউটিলিটির BOOT.INI ট্যাবে মুভ করুন এবং /SAFEBOOT লেবেল করা বক্সে টিক করুন। এবার MINIMAL অথবা NETWORK অপশন সিলেক্ট করুন এবং ওকে করে সিস্টেম রিস্টার্ট করুন। সমস্যা সমাধানের সময় সেইফ মোড যাতে লোড হতে না পারে, সেজন্য সিস্টেম কনফিগারেশন ইউটিলিটি আবার চালু করুন এবং BOOT.INI ট্যাবের /SAFEBOOT অপশনকে আনটিক করুন।

ধাপ-৪ :

সেইফ মোডে এক্সেস করার আরেকটি পদ্ধতি রয়েছে উইন্ডোজ ভিসতায়। এর জন্য উইন্ডোজ কী চেপে চালু করুন সিস্টেম কনফিগারেশন ইউটিলিটি এবং R চেপে msconfig টাইপ করে এন্টার চাপুন। এবার বুট ট্যাবে গিয়ে Safe boot বক্সে টিক করুন। এবার দরকার অনুযায়ী হয় Minimal নতুবা Network সিলেক্ট করে ওকে করুন সিস্টেম রিস্টার্ট করার পর।

ধাপ-৫ :

সেইফ মোডে উইন্ডোজ লোড করে সীমিতসংখ্যক ড্রাইভার এবং এড়িয়ে যায় সেসব প্রোগ্রাম যেগুলো কনফিগার করা হয়েছিল স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্টার্ট হবার জন্য। তারপরও সেইফ মোডে লোড হতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লাগে এবং উইন্ডোজ ডেস্কটপ যখন আবির্ভূত হয়, তখন এর অবয়ব নাটকীয়ভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে ভিন্ন থাকে। ডেস্কটপ ব্যাকগ্রাউন্ড অপসারিত হয় এবং কম রেজ্যুলেশনের হয়ে থাকে। স্ক্রিনের প্রত্যেক প্রান্তে Safe Mode দেখা যায়। উইন্ডোজ এক্সপি ব্যবহারকারীদের লগ করা উচিত হবে নতুন উন্মোচন করা অ্যাডমিনিস্ট্রেটর অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে। পক্ষান্তেরে ভিসতার যেকোনো অ্যাকাউন্টেই চমৎকার।

ধাপ-৬ :

সেইফ মোডের অন্যতম এক ব্যবহার হলো- নতুন ড্রাইভার আনইনস্টল করা, যা সমস্যার কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ড্রাইভারের পূর্ববর্তী ভার্সনে ফিরে যেতে চাইলে উইন্ডোজ এক্সপিতে চালু করুন ডিভাইস ম্যানেজার। এজন্য এক্সপিতে Start-এ ডান ক্লিক করে সিলেক্ট করুন My Computer>Properties. এবার Hardware ট্যাবে গিয়ে Device Manager বাটনে ক্লিক করুন। পক্ষান্তেরে ভিসতার Start বাটনে ক্লিক করে Computer-এ ডান ক্লিক করে Device Manager লিঙ্ক ক্লিক করার আগে সিলেক্ট করুন Properties.

ধাপ-৭ :

নেভিগেট করুন বিভিন্ন ধরনের বা ক্যাটাগরির হার্ডওয়্যার জুড়ে এবং Properties সিলেক্ট করার আগে ডান ক্লিক করুন সমস্যাযুক্ত হার্ডওয়্যারে। ড্রাইভার ট্যাবে গিয়ে ক্লিক করুন Roll Back Driver বাটনে। এবার আনইনস্টল প্রসেস চালু করলে পূর্ববর্তী ড্রাইভার রিস্টোর হবে। এ কাজটি সম্পন্ন হবার পর চেক করে দেখুন, উইন্ডোজ স্বাভাবিকভাবে চালু হয়েছে। এর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে Uninstall বাটন, হার্ডওয়্যার ড্রাইভারকে পুরোপুরি আনইনস্টল করার জন্য।

ধাপ-৮ :

অ্যান্টিভাইরাস ও অ্যান্টিস্পাইওয়্যার রান করানোর জন্য সেইফ মোডও ব্যবহার হয়। বিভিন্ন ধরনের ম্যালওয়্যার সংক্রমণ সত্যিকার অর্থে সিকিউরিটি সফটওয়্যার ব­ক করতে পারে, তবে সেইফ মোডে টিউনিংয়ের মাধ্যমে হুমকিকে সাফল্যের সাথে অপসারণ করা যায়। Safe Mode with Networking অপশন সিলেক্ট করার ব্যাপারে নিশ্চিত থাকতে হবে। কেননা, এতে ইন্টারনেট থেকে সর্বশেষ অ্যান্টিভাইরাস ও অ্যান্টিস্পাইওয়্যার ডেফিনেশন ফাইল ডাউনলোড করার জন্য ইন্টারনেটে যুক্ত থাকা সম্ভব।

ধাপ-৯ :

যদি আগের কাজের অবস্থায় স্বাভাবিকভাবে সিস্টেম রিস্টোর ফিরে আসতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সেইফ মোড সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। উইন্ডোজ এক্সপি ও ভিসতায় Start-এ ক্লিক করে All Programs>Accessories>System Tools ক্লিক করুন এবং পরিশেষে ক্লিক করুন System Restore-এ। এক্ষেত্রে নিশ্চিত থাকতে হবে Restore my Computer to an earliest অপশন যেন সিলেক্ট করা থাকে এবং ক্লিক করুন Next-এ।

ধাপ-১০ :

যেসব প্রোগ্রাম স্বাভাবিকভাবে উইন্ডোজ থেকে অনইনস্টল করা যায় না সহজেই, সেসব প্রোগ্রাম সেইফ মোডে অপসারণ করা যায়। এজন্য উইন্ডোজ এক্সপিতে Add বা Remove Programs ওপেন করুন কন্ট্রোল প্যানেল থেকে। এবার একটি প্রোগ্রাম সিলেক্ট করে Remove বাটনে ক্লিক করুন। উইন্ডোজ ভিসতায় কন্ট্রোল প্যানেল থেকে Programs and Features ওপেন করুন। লিস্ট থেকে প্রোগ্রাম সিলেক্ট করুন এবং Uninstall বাটনে ক্লিক করুন। স্বতন্ত্র ফাইল ডিলিটের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হলে সেক্ষেত্রে Safe Mode সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। এক্ষেত্রে সেইফ মোডে স্টার্ট করে কাঙ্ক্ষিত ফাইল সিলেক্ট করে স্বাভাবিক নিয়মে ডিলিট করুন।

No comments:

Post a Comment