প্রথম পর্বে আমি বিস্তারিত আলোচনা করেছিলাম কিভাবে ল্যান নেটওয়ার্কিং এর জন্য ক্যাবল এবং স্টার টপোলজি প্রস্তুত করতে হয় অর্থাৎ আমরা হার্ডওয়্যার অংশ প্রস্তুত করা শিখেছি, এবার ইন্সটলেশনের পালা। UTP ক্যাবলগুলো পিসিগুলোতে কানেক্ট করে কম্পিউটারগুলো চালু করুন। এখন ইন্সটলেশনের প্রথম ধাপে প্রতিটি কম্পিউটারের জন্য একটি করে IP Address দিতে হবে। আমরা সাধারনত IP Address হিসেবে IPv4 ব্যবহার করি এটি ৩২ বিটের একটি বাইনারি (Binary) নম্বর। প্রতিটি ওয়ার্কগ্রুপের (Workgroup) সকল কম্পিউটারের জন্য আলাদা আলাদ IP Address দিতে হবে। একই এড্রেসের দুটি কম্পিউটার একই নেটওয়ার্কে কখনও থাকতে পারবে না।
আসুন এবার IP Address নিয়ে কিছুটা আলোচনা করি। ৩২ বিটের IP Address এর উদাহরন নিচে দিলাম :
11000000.10101000.00000000.00000001 (বাইনারি ফরমেট)
তবে আমাদের সহজে বোঝা এবং লেখার সুবিধার জন্য IP Address কে বাইনারি ফরমেটে না লিখে ডেসিমেল ফরমেটে লিখা হয়। যা নিম্নরুপ :
192.168.0.1 (ডেসিমেল ফরমেট)
উপরে এই পুরোটা নিয়ে একটি এড্রেস। এখানে যে ডট (.) দিয়ে আলাদা করা ৪ টি সংখ্যা দেখছেন, প্রতিটি সংখ্যা ৮ বিটের বাইনারি সংখ্যাকে প্রকাশ করছে। IP address এর সর্বত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে একে ৫টি ক্লাসে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে :
CLASS A শুরু 0.0.0.0 থেকে 127.0.0.0 পর্যন্ত এবং সাবনেট মাস্ক 255.0.0.0
CLASS B শুরু 128.0.0.0 থেকে 191.0.0.0 পর্যন্ত এবং সাবনেট মাস্ক 255.255.0.0
CLASS C শুরু 192.0.0.0 থেকে 223.0.0.0 পর্যন্ত এবং সাবনেট মাস্ক 255.255.255.0
CLASS D শুরু 224.0.0.0 থেকে 239.0.0.0 পর্যন্ত [মাল্টিকাস্টের জন্য সংরক্ষিত]
CLASS E শুরু 240.0.0.0 থেকে 255.0.0.0 পর্যন্ত [রিসার্চের জন্য সংরক্ষিত]
এখানে 127.0.0.0 কে লুপ ব্যাক এড্রেস বলা হয়, অর্থাৎ এটি কম্পিউটারকে নিজের নেটওয়ার্কই নির্দেশ করে যা টেস্টিং এর জন্য ব্যাবহৃত হয়।
এর মধ্যে প্রাইভেট IP Address গুলো হচ্ছে :
CLASS A শুরু 10.0.0.0 থেকে 10.255.255.255 পর্যন্ত
CLASS B শুরু 172.16.0.0 থেকে 172.31.255.255 পর্যন্ত
CLASS C শুরু 192.168.0.0 থেকে 192.168.255.255 পর্যন্ত
এই এড্রেসগুলো শুধুমাত্র অভ্যন্তরীন নেটওয়ার্ক তৈরীর জন্য রাখা হয়েছে। তাই এইসব প্রাইভেট IP Address গুলো দিয়ে আমরা আমাদের নিজেদের মধ্যে অভ্যন্তরীন নেটওয়ার্ক তৈরী করতে পারব কিন্তু এই Address গুলো দিয়ে সরাসরি ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত হওয়া যাবে না।
খুব বেশী কি জটিল মনে হচ্ছে? তাহলে একটু সহজ করে দেই.... প্রথমে Control Panel > Network Connections > Local Area Connection (ল্যান কার্ড ইন্সটল থাকতে হবে) এ ক্লিক করুন। নিচের উইন্ডোটি আসবে।
এখান থেকে Internet Protocol (TCP/IP) সিলেক্ট করে Properties বাটন ক্লিক করুন। সেখানে নিচের উইন্ডোটি পাবেন:
এবার IP Address এবং Subnet Mask বসান। আপনি যদি নিজেদের মধ্যে নেটওয়ার্কিং করতে চান সেক্ষেত্রে প্রাইভেট IP Address ব্যবহার করা উচিত। তাই প্রথম কম্পিউটারটির IP Address দিন 192.168.0.1, তারপরেরটি 192.168.0.2,...... এভাবে 192.168.0.254 পর্যন্ত ক্রমানুসারে প্রতিটি কম্পিউটারে IP Address বসাতে থাকুন। এক্ষেত্রে সাবনেট মাস্ক (Subnet Mask) সব কম্পিউটারে হবে একই 255.255.255.0 । ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত না হতে চাইলে IP Address এবং Subnet Mask বসানোই যথেষ্ট।
তবে আপনার নেটওয়ার্কটিকে যদি ইন্টারনেটের সথে যুক্ত করতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে অতিরিক্ত Gateway Address এবং DNS Server Address বসাতে হবে। যে কম্পিউটারটি সরাসরি ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত, সেই কম্পিউটারটির জন্য ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডারদের দেয়া Gateway Address এবং DNS Server Address বসাতে হবে (যদি GPRS Modem ব্যবহার করেন তবে Gateway Address বা DNS Server Address বসাতে হবে না)। ইন্টারনেট যুক্ত এই কম্পিউটারটিকে সার্ভার হিসেবে ব্যবহার করে অন্য কম্পিউটারগুলো ইন্টারনেট ব্যবহার করবে তাই অন্য কম্পিউটারগুলোর (Client) জন্য Gateway Address এবং DNS Server Address হবে সার্ভার কম্পিউটারের IP Address। বোঝাতে পারলাম কি??
এখানে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, ইন্টারনেট যুক্ত নেটওয়ার্কে যে কম্পিউটারটি সরাসরি ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত সেই কম্পিউটারটিকে Server হিসেবে ব্যবহার করব এবং বাকি সকল কম্পিউটারকে Client হিসেবে ব্যবহার করব। সকল কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য সার্ভার কম্পিউটারটি সব সময় চালু রাখতে হবে। সার্ভার কম্পিউটারটি বন্ধ করলে নেটওয়ার্কের অন্যান্য কম্পিউটার ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবে না, তবে নিজেদের মধ্যে নেটওয়ার্কিং/ফাইল শেয়ারিং চালু থাকবে। যদি ইন্টারনেট সংযোগ না থাকে তবে নেটওয়ার্কে সার্ভারের কোন প্রয়োজন নেই, তখন সব পিসিই হবে ক্লায়েন্ট।
সূত্র
Saturday, March 27, 2010
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment